দেশের প্রথম ইপিজেড প্রতিষ্ঠা হয় রাজধানীর উপকণ্ঠ সাভারের আশুলিয়ায়। ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল প্রতিষ্ঠার পর বাড়ে জনসংখ্যা। গুরুত্ব বিবেচনায় উপজেলাকে ভাগ করা হয় দুটি থানায়। একটি বর্তমান সাভার মডেল থানা। আর পাঁচটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠন করা হয় আশুলিয়া থানা।
২০০৫ সালের ৭ ডিসেম্বর বিএনপি সরকার আমলে থানার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়। তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফর জামান খান বাবর থানার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
জনৈক আহাদ আলীর দুই তলা বাড়ি ভাড়া নিয়ে যাত্রা শুরু হয় থানার। তবে একযুগ পেরিয়ে গেলেও হয়নি থানার স্থায়ী ঠিকানা। এখনো ভাড়াটে হয়েই কাজ চালাতে হচ্ছে এই থানায় কর্মরতদের।
শনিবার দুপুরে বেলুন উড়িয়ে ও ফিতা কেটে পুরাতন থানা স্থানান্তর অনুষ্ঠান বেশ ঘটা করেই আয়োজন করে আশুলিয়া থানা পুলিশ।
পুরাতন থানা কম্পাউন্ডের পেছনে ২০০ গজ দূরেই দেওয়ান সিরাজুল ইসলামের পাঁচ তলা বাড়িটি ভাড়া নিয়ে করা হয়েছে থানা। নতুন থানা কম্পাউন্ডটি উদ্বোধন করেন পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার।
নতুন ভাড়া করা ভবনে স্থানান্তর হয়েছে আশুলিয়া থানা। ছবি: নিউজবাংলা
উপস্থিত ছিলেন সাভার ক্যান্টনমেন্টের এমপি ইউনিটের কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল খুরশীদ আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুল আলম, সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসিনা দৌলা।
থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছাড়াও রয়েছেন তিন জন অতিরিক্ত ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার কর্মকর্তা। রয়েছেন ২০ জন উপ-পরিদর্শক, ১৯ সহকারী উপপরিদর্শক ও ৬৪ জন কনস্টেবল।
এক বছর ধরে আশুলিয়া থানায় কর্মরত উপ-পরিদর্শক (এসআই) টুম্পা সাহা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ওই থানায় (পুরাতন) প্রতিবন্ধকতা বলতে ১০০ পার্সেন্টের মধ্যে ছিল ৯০ পার্সেন্ট। যেমন আমাদের মেয়েদের কোন সুষ্ঠু ব্যারাক ছিল না। মেয়েদের থাকার জায়গার পরিবেশ ছিল না। স্বাস্থ্যকর পরিবেশ বলতে কিছুই ছিল না। গাদাগাদি করে মেয়েরা থাকত।
‘সেখানে বাথরুমের সুব্যবস্থা ছিল না। তারপর রান্নার ক্যাপাসিটি ছিল না। আসামিদের থাকার ভালো ব্যবস্থা ছিল না। এখন বর্তমানে আসামিদের স্বাস্থ্যকর একটা মোটামুটি ব্যবস্থা হয়েছে।’
এসআই টুম্পা বলেন, ‘রেপ কেইসের যখন একটা ভিকটিম আসতো তখন সবার সামনে কথা বলতে পারত না। একটা মেয়ে ভিকটিম সবার সামনে একগাদা পুরুষের সামনে তার ব্যক্তিগত অনুভূতি শেয়ার করতে পারত না। এখন আমাদের একটা নারী ও শিশু ডেস্ক হয়েছে, আলাদা একটা রুম হয়েছে। সেখানে তারা আসবে আমি শুনব তাদের কথা এবং সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।'
নতুন স্থানে বড় জায়গা পেয়ে খুশি পুলিশ কর্মকর্তারা। ছবি: নিউজবাংলা
ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার বলেন, ‘যদি বাংলাদেশ বলা হয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ থানা কোনটা? আমি বলব, আশুলিয়া থানা। আমাদের অর্থনীতির যে অর্জন তার একটি বড় অংশ আশুলিয়া থেকে আসে।
‘এখানে একটা বিশ্ববিদ্যালয় আছে, সবচেয়ে বড় ক্যান্টনমেন্টটি এখানে, বাংলাদেশের অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানও এখানে রয়েছে। অথচ এই থানার বিল্ডিংটা আগে জীর্ণশীর্ণ ছিল। যার প্রেক্ষিতে এইখানে আমরা নতুন একটা বিল্ডিং ভাড়া নিয়ে চলে এসেছি।’
ডিআইজি হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা এই থানা ভবনটি ভাড়া নিয়েছি। এটা আমরা আপাতত সন্তুষ্ট। কিন্তু আমাদের স্থায়ী সন্তুষ্টি হবে তখন যখন আমরা স্থায়ী ভবনে যেতে পারব।’